আমার প্রথম ঊষা
সকাল বেলা মা আমাকে ঘুম থেকে ওঠাবার সাথে সাথে আমি জানালা দিয়ে সিতাগড়া পাহাড়ের চুড়ার ওপর গোল পাথরের দিকে তাকিয়ে সেই পাথরের পাশ থেকে উদীয়মান লাল সূর্যের দিকে তাকিয়ে দেখতাম – কি এক আজানা রোমাঞ খুঁজে পেতাম এই দৃশ্যের মধ্য দিয়ে । রোজ-রোজ এই দৃশ্য দেখবো বলে আামিও মাকে বলে রাখতাম আমাকে ঠীক সময়ে উঠিয়ে দেবার জন্য । আমার মা বিয়ের আগে কলকাতার বিখ্যাত ডায়সেসন্ স্কুলে মন্টেশ্বরী টিচার ছিলেন এবং এখন সেই পরিপ্রেক্ষীতে মনে হয় - সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠাবার কী সুন্দর সহজ উপায় ছিল মায়ের l
খাটের ওপর দাঁড় করিয়ে মা আমাকে জামা কাপড় পরাতেন এবং আমি অপলক নয়নে ঊদীয়মান তপনের পাহাড়ের গায়ে রংএর খেলা উপভোগ করতাম । এই দৃশ্য আামার কোমল মনে এতই গভীর রেখাপাত করেছিল যে আজ ষাঠ দশক পরও হাজারীবাগে গেলে সিতাগড়া পাহাড়ের চুড়ার ওপর গোল পাথরের দিকে তাকিয়ে দেখি ও স্বাভাবিক ভাবেই ছোটবেলায় দেখা সেই দৃশ্য মনের পটে ভেষে ওঠে ।
হাজারীবাগ ঠান্ডা যায়গা – শীত কালে নদীর ধারে ঘাসের ওপর জলের কণা প্রায় জমে এক হাল্কা সাদা চাদরের সৃষ্টি করত । মা তখন আমাকে ওনার নিজের হাতে বোনা এক লাল সোয়েটার ও লাল উলের হাফ প্যান্ট পিরিয়ে দিতেন । এ পোষাকটিও আমার বড় প্রীয় ছিল । হয়ত এ কারণেই লাল রং আমার বড় প্রীয় ।